প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব চাপ: ডিম-মুরগির দাম বাড়ার আশঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:৪৮, ২০ জুন ২০২৫ | আপডেট: ১৩:৫০, ২০ জুন ২০২৫

সরকারের ব্যয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজস্ব আদায়ের বাড়তি চাপের মুখে পড়েছে দেশের পোল্ট্রি শিল্প। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করে এমনটাই জানিয়েছে খাতসংশ্লিষ্ট শীর্ষ সংগঠনগুলো। তাদের আশঙ্কা, এই অতিরিক্ত চাপের ফলে ডিম ও মুরগির দাম বাড়তে পারে, যা সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়াবে।
চলতি বাজেটে কৃষি, খাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে মোট ৩৯ হাজার ৬২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেট ঘাটতি মোকাবেলায় সরকার পোল্ট্রি খাত থেকে অধিক রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের আহ্বায়ক শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, “কম দামে ডিম ও মুরগি সরবরাহ করতে চাইলে সরকারের নীতি সহায়তা অপরিহার্য। বর্তমান প্রস্তাবিত করহার পোল্ট্রি উৎপাদনকে সংকটে ফেলবে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফিডের দাম কিছুটা কমলেও তা অস্থির। ওয়ার্ল্ড পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, “ফিডের দাম আবার বাড়লে ডিম ও মুরগির বাজারমূল্যও বাড়বে, যার প্রভাব সরাসরি পড়বে ভোক্তাদের উপর।”
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পোল্ট্রি খাতের টার্নওভার ট্যাক্স ০.৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে নতুন বাজেটে। এছাড়া ২০১৫ সাল পর্যন্ত কর অব্যাহতির সুবিধাভোগী এই খাত বর্তমানে ১৫ শতাংশ হারে করপোরেট ট্যাক্স দিচ্ছে, যা আগামী অর্থবছরে ২৫ থেকে সাড়ে ২৭ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাব উঠেছে।
শিল্প উদ্যোক্তারা বলছেন, এটি অত্যন্ত অসমর্থনযোগ্য বৃদ্ধি। কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান অগ্রিম আয়কর কমিয়ে সর্বোচ্চ ১ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের আহ্বায়ক আরও বলেন, “কিছু জায়গায় সমন্বয় করলে আমরা উৎপাদন খরচ সহনীয় রাখতে পারব এবং ডিম-মুরগির দাম ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা সম্ভব হবে।”
অর্থনীতিবিদরাও মনে করছেন, দেশের স্বল্পমূল্যের প্রোটিন চাহিদা পূরণে পোল্ট্রি খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাজস্ব আহরণে এই খাতের ওপর অতিরিক্ত চাপ না দিয়ে টেকসই নীতিগত সহায়তা প্রয়োজন।