ধানের খোল পচা রোগ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭:৫২, ২ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ০৭:৫২, ২ জুলাই ২০২৫

ধানের খোল পচা রোগ: কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

ধান গাছে খোল পচা রোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ ছত্রাকজনিত সমস্যা, যা ফসলের উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করতে পারে। এটি Cerocladium oryzae নামক ছত্রাক দ্বারা হয়ে থাকে। রোগটি মূলত বীজবাহিত এবং আগের মৌসুমের নাড়া বা বিকল্প পোষকে অবস্থান করে। মাজরা পোকার আক্রমণ বা টুংরো রোগে আক্রান্ত গাছে এই রোগের প্রকোপ তুলনামূলক বেশি দেখা যায়। গরম ও আর্দ্র পরিবেশ রোগটির বিস্তারে সহায়ক, বিশেষ করে বৃষ্টির ঝাপটায় এটি দ্রুত ছড়ায়। খোল পচা রোগটি গাছের থোর অবস্থায় বেশি দেখা যায় এবং এটি বছরের যেকোনো মৌসুমেই হতে পারে।

রোগের শুরুতে ধানের শীর্ষ পাতার খোলের ওপর গোল বা অনিয়মিত দাগ দেখা যায়, যার কেন্দ্র ধূসর এবং কিনারা বাদামি বা গাঢ় রঙের হয়ে থাকে। পরবর্তী সময়ে দাগগুলো বড় হয়ে পুরো খোলে ছড়িয়ে পড়ে। রোগের তীব্র আক্রমণে ধানের শীষ বের হতে বাধা পায়—কখনো তা পেঁচিয়ে যায় কিংবা আংশিক বের হয়। ফলে শীষে খুব অল্প সংখ্যক দানা পুষ্ট হয়। অনেক সময় মাজরা পোকার ক্ষতস্থানেও এই রোগের ছত্রাক দেখা যেতে পারে। খোল পচা রোগ সাধারণত পাতায় হয় না, তবে অন্যান্য খোলেও হতে পারে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মধ্যে রোগমুক্ত বীজ ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পূর্ববর্তী ফসলের অবশিষ্টাংশ, বিশেষ করে নাড়া ও গাছের অংশ পুড়িয়ে ফেলা উচিত। জমিতে এমওপি বা মিউরেট অব পটাশ সার উপরি প্রয়োগ এবং ইউরিয়া সারের পরিমাণ সীমিত রাখা জরুরি। জমির পানি শুকিয়ে আবার নতুন করে সেচ দেওয়া রোগ দমনে সহায়ক। বীজ শোধনের জন্য কার্বেন্ডাজিম বা প্রোভ্যাক্স ২০০ ডব্লিউপি প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে ব্যবহার করা উচিত।

মাজরা পোকা রোগ বিস্তারে সহায়তা করে, তাই এ পোকা দমন করাও জরুরি। এজন্য কার্বোফুরান গ্রুপের কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। সঠিক পরিচর্যা ও সনাক্তকরণের মাধ্যমে এই রোগের ক্ষতি থেকে ধান গাছকে রক্ষা করা সম্ভব।

আরও পড়ুন