পেঁয়াজের দরপতনে লোকসানে ফরিদপুরের কৃষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২:০৩, ২৮ জুন ২০২৫ | আপডেট: ১২:০৪, ২৮ জুন ২০২৫

পেঁয়াজের দরপতনে লোকসানে ফরিদপুরের কৃষকরা

ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম প্রতি মণে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১,৪৫০ থেকে ১,৬০০ টাকায়, যেখানে উৎপাদন খরচ পড়েছে ২,০০০ টাকারও বেশি। এতে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।

শুক্রবার সরেজমিনে বালিয়া বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিক্রেতার সংখ্যা বেশি হলেও ক্রেতা কম। অনেক কৃষক দাম শুনেই হতাশ হয়ে পেঁয়াজ না বেচেই বাড়ি ফিরছেন। একজন চাষি জানান, সার, বীজ, কীটনাশক, পানি ও শ্রমিক খরচ মিলিয়ে প্রতিমণ পেঁয়াজ উৎপাদনে খরচ হয়েছে ২,০০০ টাকা। এখন তা ১,৪৫০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

আরেক কৃষক খলিল হোসেন জানান, ভালো দামের আশায় ঘরে রাখা পেঁয়াজের ৩০ শতাংশ ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন যা আছে, সেটিও বিক্রি হচ্ছে লোকসানে। তিনি দাবি করেন, বাজারে যদি প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম অন্তত ২,০০০–২,৩৫০ টাকা হতো, তাহলে তারা বাঁচতে পারতেন।

সালথা উপজেলার প্রায় প্রতিটি হাটেই পেঁয়াজের কেনাবেচা হয়। এসব হাটে ফরিদপুর ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে পাইকাররা এসে ট্রাকে করে পেঁয়াজ নিয়ে যান। কৃষকেরা বলছেন, সরকার ধান-গমের মতো পেঁয়াজেরও ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ ও সহায়তা দিলে এই সংকট কিছুটা কাটানো যেত।

তাঁদের দাবি, প্রতিটি ইউনিয়নে কোল্ডস্টোরেজ স্থাপন করলে সংরক্ষণে সুবিধা হতো এবং দরপতনের ধাক্কা কিছুটা সহনীয় হতো। চাষি সিরাজ মোল্যা বলেন, "প্রতি মণ পেঁয়াজের ন্যূনতম দাম ২,২০০ থেকে ২,৫০০ টাকা হওয়া উচিত, না হলে আমরা চাষ বাদ দিতে বাধ্য হব।"

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এবার সালথায় ১২,৩০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে এবং উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টনের বেশি। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, ফলন ভালো হলেও অতিরিক্ত সরবরাহ ও সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতের কারণে বাজারে দাম কমেছে। তারা আশা করছেন, পরিস্থিতি শিগগিরই স্বাভাবিক হবে।

আরও পড়ুন