গবাদিপশুর রোগ প্রতিরোধে টিকা অপরিহার্য: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
প্রকাশ: ০৯:০৩, ১ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৪:১৬, ১ জুলাই ২০২৫

গবাদিপশুর রোগ প্রতিরোধে সময়মতো টিকা প্রদানের গুরুত্ব তুলে ধরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “গবাদিপশু পালনের ক্ষেত্রে রোগ নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু মাংস উৎপাদন বা রপ্তানির জন্য নয়, পশুর সুস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নিয়মিত ভ্যাকসিন প্রয়োগ অত্যন্ত জরুরি।”
শনিবার (২৮ জুন) মানিকগঞ্জ পৌরসভার জয়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে গবাদিপশুর ক্ষুরারোগ প্রতিরোধে টিকা কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রকল্পটি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও ভোলা জেলার নির্বাচিত এলাকায় টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, “ভ্যাকসিন যেন সঠিক সময়ে প্রদান করা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি খামারিদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার বিষয়ে সবসময় সচেষ্ট থাকতে হবে।” তিনি জানান, গবাদিপশুর ‘লাম্পি স্কিন ডিজিজ’ (এলএসডি) প্রতিরোধে দেশীয়ভাবে ভ্যাকসিন উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ঈদুল আজহার কোরবানির হাটে এলএসডি আক্রান্ত গরু এসেছে—এমন অভিযোগ থাকলেও বাস্তবে তা পাওয়া যায়নি।
দুধের সঠিক মূল্য না পাওয়া প্রসঙ্গে ফরিদা আখতার বলেন, “দুধের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় খামারিরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। অথচ বিদেশ থেকে গুড়া দুধ আমদানির বিপরীতে যদি দেশে চিলিং সেন্টার স্থাপন করা হতো, তাহলে খামারিরা অনেক বেশি উপকৃত হতেন। বিদেশ থেকে গুড়া দুধ আমদানি আমাদের জন্য লজ্জাজনক।” তিনি এ খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, “দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে খামারিরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। খামারিদের সহযোগিতা ছাড়া কোনো প্রকল্প সফলতা অর্জন করতে পারে না।” তিনি আরও বলেন, “খামারিদের উৎপাদনই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে এবং জাতীয় অর্থনীতিকে শক্ত ভিত দিচ্ছে।”
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা, পুলিশ সুপার মোছা: ইয়াছমিন খাতুন, অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. বয়জার রহমান, প্রকল্প পরিচালক ডা. অমর জ্যোতি চাকমা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মজিবুর রহমান এবং সুফলভোগী খামারিরা।
ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ এবং পিপিআর (Peste des Petits Ruminants) নির্মূল প্রকল্পের আওতায় এই ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, যার লক্ষ্য দেশের গরু-মহিষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং খামারিদের ক্ষতি কমিয়ে আনা।