আলুতে লোকসান ঠাকুরগাঁওয়ের চাষীদের

প্রকাশ: ১১:৩৭, ২৮ জুন ২০২৫ | আপডেট: ১১:৪৩, ২৮ জুন ২০২৫

আলুতে লোকসান ঠাকুরগাঁওয়ের চাষীদের

গত মৌসুমে প্রতি কেজি আলুর দাম ৮০ টাকা পর্যন্ত ওঠায় ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক কৃষক ভালো লাভ করেছিলেন। সেই অভিজ্ঞতায় এবার অনেকেই বেশি জমিতে আলু চাষ করেছেন, কেউ কেউ আবার ঋণ নিয়েও চাষে নেমেছেন। কিন্তু এবার আলুর দাম দ্রুত কমে যাওয়ায় লাভ তো দূরের কথা, চাষের খরচও তুলতে পারছেন না তাঁরা।

বালিয়াডাঙ্গীর কৃষক হামিদুর রহমান গত সপ্তাহে প্রতি কেজি আলু ১১ টাকায় বিক্রি করেছেন, যেখানে ১৫ দিন আগেও পেয়েছিলেন ৩২-৩৩ টাকা। তিনি এক একর জমিতে চাষ করেছিলেন ঋণ নিয়ে, এখন বিপাকে পড়েছেন। শুধু তিনি নন, হাজারো কৃষক এভাবে লোকসানে পড়েছেন।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যে জানা যায়, গত বছর জেলায় ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল, আর এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ৫০০ হেক্টরে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫৫৫ হেক্টরে আগাম আলু চাষ হয়েছে।

কৃষকেরা জানান, এবার সেপ্টেম্বরে অতিবৃষ্টির কারণে বীজ নষ্ট হওয়ায় দ্বিতীয়বার রোপণ করতে হয়, এতে খরচ বেড়েছে। এখন সেই আগাম আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১১-১২ টাকা কেজিতে, যা উৎপাদন খরচেরও কম। কেউ কেউ ১২-১৩ টাকা কেজি লোকসান গুনছেন।

একাধিক কৃষক তাঁদের লোকসানের হিসাব তুলে ধরেছেন—কেউ তিন বিঘায় ৮৭ হাজার টাকা লোকসান করেছেন, কেউ আবার ফসল তুলেও বিক্রি করতে পারছেন না, কারণ আগাম আলু হিমাগারে রাখা যায় না। দাম কমার পাশাপাশি ক্রেতারও অভাব দেখা দিয়েছে।

এ অবস্থায় কৃষকেরা সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, যখন দাম বাড়ে তখন সরকার দর বেঁধে দেয়, কিন্তু দাম পড়ে গেলে কোনো উদ্যোগ নেই।

এদিকে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চাহিদা দেখে না ভেবে বেশি জমিতে চাষ করায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে। উৎপাদন ভালো হলেও বাজারে দাম না থাকায় কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

আরও পড়ুন