মানবদেহে খুঁজে পাওয়া গেল অদৃশ্য ’রিসাইক্লিং কেন্দ্র

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪:১৪, ৯ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৪:১৪, ৯ জুলাই ২০২৫

মানবদেহে খুঁজে পাওয়া গেল অদৃশ্য ’রিসাইক্লিং কেন্দ্র

মানবদেহের কোষের ভেতরে বিজ্ঞানীরা একটি নতুন অঙ্গাণু খুঁজে পেয়েছেন, যার নাম হেমিফিউজোম। এটি কোষের ভেতরে পরিচ্ছন্নতা ও পরিবহনের কাজ করে এবং গবেষকদের মতে এটি একধরনের রিসাইক্লিং কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।

এই অঙ্গাণুটি আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষকদের একটি দল। গবেষণার নেতৃত্ব দেন সেহাম ইব্রাহিম। হেমিফিউজোম কোষের ভেতরের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখে, পরিবহন করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহ করে। এটি সবসময় দৃশ্যমান থাকে না, বরং কোষের প্রয়োজন অনুযায়ী অস্থায়ীভাবে তৈরি হয় ও কাজ শেষে অদৃশ্য হয়ে যায়।

হেমিফিউজোমের প্রধান কাজ হলো ভেসিকল নামের থলির মতো গঠন তৈরিতে সাহায্য করা, যেগুলো কোষের ভেতরে নানা উপাদান পরিবহন করে। একে তুলনা করা হয় লোডিং ডক-এর সঙ্গে, যেখানে ছোট ছোট "ডেলিভারি ট্রাক" অর্থাৎ ভেসিকলগুলো মালামাল আদান-প্রদান করে।

এই অঙ্গাণুর আবিষ্কারে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নত প্রযুক্তি ক্রায়ো-ইলেকট্রন টমোগ্রাফি, যা হিমায়িত কোষের ভেতরের গঠন বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, হেমিফিউজোমের কাজ যদি বিঘ্নিত হয়, তাহলে হারমানস্কি-পুডলাক সিনড্রোম-এর মতো বিরল রোগ হতে পারে। এই রোগে চোখের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা ও চামড়ার রং পরিবর্তনের মতো উপসর্গ দেখা যায়। কারণ এই রোগে কোষের ভেতরে উপাদান পরিবহন ব্যাহত হয়।

গবেষণা দলের অন্যান্য সদস্য ছিলেন বেচারা কাচার, আমিররাসুল তাভাকোলি এবং শিকিয়ং হু।

তবে এখনো অনেক কিছুই অজানা। সুস্থ কোষে হেমিফিউজোম কীভাবে কাজ করে এবং রোগের সময় এর ভূমিকা কী—তা জানতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবুও এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার নতুন পথ উন্মোচন করতে পারে।

এই ছোট্ট হেমিফিউজোম হতে পারে বড় কোনো বিপ্লবের সূচনা।

আরও পড়ুন