যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার স্বপ্ন? প্রস্তুতি নিন ধাপে ধাপে এই নির্দেশনায
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:২৬, ৯ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৪:২৭, ৯ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আগ্রহ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিন দিন বেড়েই চলেছে। উচ্চমানের শিক্ষা, গবেষণার সুযোগ, ইংরেজিভাষী পরিবেশ, বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ ও ফান্ডিং সুবিধা, এবং উন্নত জীবনযাত্রার মান—সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার যাত্রাটি সহজ নয়। আবেদন থেকে শুরু করে ভর্তি হওয়া পর্যন্ত পথটি দীর্ঘ, জটিল ও সময়সাপেক্ষ। এ সময় হতাশা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়া খুবই স্বাভাবিক। তবে সুসংগঠিত প্রস্তুতি থাকলে এই পথও হয়ে উঠতে পারে অনেক সহজ।
কোথা থেকে শুরু করবেন?
প্রথম ধাপেই ইংরেজি দক্ষতার প্রমাণ দিতে হয়, যেমন IELTS বা TOEFL। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট স্কোর চায়, তবে অতিরিক্ত স্কোর না পেলেও চিন্তার কিছু নেই—ন্যূনতম স্কোর পেলেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে আবেদন করা যায়। এর পাশাপাশি GRE/GMAT প্রয়োজন হতে পারে নির্দিষ্ট প্রোগ্রামের জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন এবং ফান্ডিং বিবেচনা
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫,০০০ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাই আপনার পছন্দের বিষয়, গবেষণার সুযোগ, ফান্ডিং পাওয়ার সম্ভাবনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান বিবেচনা করে পছন্দমতো প্রতিষ্ঠান বেছে নিতে হবে। মাস্টার্সের ক্ষেত্রে আবেদন তুলনামূলক সহজ হলেও পিএইচডির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রফেসরের সঙ্গে যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত STEM বিষয়ে।
আবেদনপত্রে কী লাগবে?
একটি পূর্ণাঙ্গ আবেদনপত্রে সাধারণত প্রয়োজন হয়:
-
IELTS/TOEFL স্কোর
-
একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট
-
স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP)
-
রেফারেন্স লেটার (LOR)
-
সিভি/রেজুমে
-
গবেষণা প্রস্তাব (পিএইচডির ক্ষেত্রে)
-
রাইটিং স্যাম্পল (বিশেষত হিউম্যানিটিজে)
এর মধ্যে SOP হলো আপনার ব্যক্তিগত ও একাডেমিক গল্প বলার সবচেয়ে বড় সুযোগ। এটি এমনভাবে লিখতে হবে যেন সেটি আপনার আগ্রহ, দক্ষতা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার স্বচ্ছ প্রতিফলন করে।
কখন আবেদন করবেন?
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার আবেদনপ্রক্রিয়া সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে। ফল সেমিস্টার (অগাস্ট-সেপ্টেম্বর) ফান্ডিংয়ের জন্য বেশি উপযোগী। প্রায়োরিটি ডেডলাইন সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারি এবং সাধারণ ডেডলাইন জানুয়ারি-মার্চের মধ্যে পড়ে। যত আগে আবেদন করবেন, তত বেশি সুযোগ থাকবে।
মানসিক প্রস্তুতিও জরুরি
আবেদনের এই সময়ে হতাশা ও দুশ্চিন্তা আসা স্বাভাবিক। তাই একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করে ধাপে ধাপে কাজ করা এবং প্রয়োজনে বন্ধু, পরিবার বা মেন্টরের সাহায্য নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিজের ওপর আস্থা রাখুন—আপনার প্রস্তুতি, পরিকল্পনা এবং ইতিবাচক মানসিকতা আপনাকে গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।
শেষ কথা
যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার যাত্রা শুধু শিক্ষার নয়, নিজের সক্ষমতা, ধৈর্য ও স্বপ্ন অনুসরণেরও এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। প্রতিটি ধাপ আপনাকে আরও পরিণত করে তুলবে। তাই সাহস রাখুন, নিজেকে প্রস্তুত করুন এবং যাত্রা শুরু করুন আত্মবিশ্বাস নিয়ে।